আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে আবার তৃতীয় ধারার চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরে একটি তৃতীয় ধরার চেষ্টা বিভিন্ন সময়ে ছিল। কিন্তু সেই চেষ্টা কখনোই সফল হয়নি। এখন আবার দেশের সুশীল সমাজ এবং বুদ্ধিজীবীদের একাংশ রাজনীতিতে মেরুকরণের চেষ্টা করছে। তবে এই চেষ্টার পেছনে আন্তর্জাতিক মহলের ইন্ধন এবং সমর্থন রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশের সুশীল সমাজের বড় অংশ এখন সরাসরি সরকারবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের দুই সম্পাদক প্রতিনিয়ত সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ করছেন এবং এ সমস্ত পত্রিকাগুলোতে বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। আগামী নির্বাচন নিয়ে ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম গতকাল এক উপ-সম্পাদকীয়তে বলেছেন যে, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা তা নির্ভর করবে সরকারের ওপর। অন্যদিকে প্রথম আলোতে বাংলাদেশের উন্নয়ন কতটা জনমুখী সে নিয়েও উপ-সম্পাদকীয়তে প্রশ্ন করা হয়েছে। এই দুটি পত্রিকা আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির দু’টি দলের ব্যাপারেই নেতিবাচক অবস্থানে থাকে, দুটি দলকে তারা সমালোচনা করে। এর প্রধান কারণ হলো বিরাজনীতিকরণকে লালন করা এবং সবসময় বাংলাদেশে সুশীল নিয়ন্ত্রিত একটি তৃতীয় ধারা সৃষ্টির ক্ষেত্রে পত্রিকা দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এখন এই দুটি সংবাদপত্র আবার অত্যন্ত সরব এবং সক্রিয় হয়েছে।
বাংলাদেশে তৃতীয় ধারা সৃষ্টিতে আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ আগ্রহী ব্যক্তি হলেন বদিউল আলম মজুমদার। তাকেও এখন সরব এবং সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। তিনিও নির্বাচন এবং বর্তমান সরকারের কঠোর সমালোচনায় মুখর অবস্থায় আছেন। বাংলাদেশের সুশীল সমাজের আরেক প্রতিনিধি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এখন সরকারের সমালোচনা করেছেন এবং তিনি প্রথম দিনই শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশকে তুলনা করেছিলেন এবং বাংলাদেশকে এখনই সতর্ক থাকা উচিত বলেও মন্তব্য করেন। এই যে হঠাৎ করে সরকারের কঠোর সমালোচনা এবং বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলার যে চেষ্টা এটির কারণ বিশ্লেষণ করতে গেলে দেখা গেছে যে, এর পেছনে মোটাদাগে যে কারণটি রয়েছে তাহলো রাজনীতিতে একটি তৃতীয় ধারা সৃষ্টির চেষ্টা। এই গোত্রটি ২০০৭ সালে এক-এগারো ডেকে এনেছিল এবং আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রধান দুই নেতাকে মাইনাস করতে চেয়েছিল। এই গুটি কয়েক ব্যক্তি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রভাব বিস্তার করে সরকারের নানা ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিল বিভিন্ন সময়। এখন তারা আবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এবং সরকারের সমালোচনা করছে যেন সরকারের সম্বন্ধে একটি নেতিবাচক ধারণা জনমনে তৈরি হয় যেন এখান থেকে একটি সৃষ্টি করা যায়। কি সেই পরিস্থিতি তা এখনো স্পষ্ট নয়।
অনেকেই মনে করেন যে, দেশে আরকটি ওয়ান-ইলেভেনের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি করার জন্য দেশের সুশীল সমাজ আগ্রহী এবং চেষ্টা করছে। তবে মজার ব্যাপার হলো যে, এবার যে উদ্যোগ সেই উদ্যোগের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলেরও একটা যোগসূত্র পাওয়া গেছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলো একই সুরে এখন কথা বলছে। এর ফলে বাংলাদেশে তৃতীয় ধারা সৃষ্টির একটি চেষ্টা আবার দৃশ্যমান হচ্ছে। এখন দেখার বিষয় যে, অন্যান্যবারের মতো এবারও সেই তৃতীয় ধারা সৃষ্টির উদ্যোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় কিনা।