আওয়ামী লীগে চমক

এস এম আনিছুর রহমান খোকা
আওয়ামী লীগের রাজনীতি আবর্তিত হয় শেখ হাসিনাকে ঘিরে। শেখ হাসিনা হলেন আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তি। তার নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ আজকের অবস্থানে এসেছে। আর শেখ হাসিনার বড় পরিচয় হলো তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। আওয়ামী লীগ কেন, সমস্ত বাংলাদেশের প্রায় সব মানুষেরাই মনে করেন যে, শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগ অস্তিত্ববিহীন এবং বিবর্ণ। আওয়ামী লীগ টিকে আছে শেখ হাসিনার জন্য। আওয়ামী লীগের মধ্যে এরকমও আলোচনা হয় যে, শেখ হাসিনার বিকল্প আওয়ামী লীগে এখন কেউ নেই। শেখ হাসিনার বিকল্প শুধু শেখ হাসিনাই। তবে এর মধ্যেও বঙ্গবন্ধু পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সরাসরি সম্পৃক্ত হবেন কিনা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে তারা আসবেন কিনা এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা রকম আলাপ আলোচনা হয়। প্রতি বছর কাউন্সিলে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসবেন কিনা এ নিয়ে নানা রকম গুঞ্জন তৈরি হয়। এবারও এই আলোচনা শুরু হয়েছে এবং এই আলোচনা চলছে। বঙ্গবন্ধু পরিবারের চারজন সদস্য এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নানাভাবে তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অবদান রাখছেন। কিন্তু কেউই আনুষ্ঠানিক কোনো পদে নেই। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেও নেই। এদের মধ্যে রয়েছেন-
শেখ রেহানা: জাতির পিতার কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছায়া সঙ্গী, বিশ্বস্ত সহচর এবং সবচেয়ে বড় বন্ধু। যেকোন সংকটে শেখ রেহানাই শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ান। বিশেষ করে ওয়ান-ইলেভেনের সময় শেখ রেহানাই দল পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। শেখ হাসিনার অন্যতম প্রেরণাদানকারী ব্যক্তি হলেন শেখ রেহানা এবং শেখ হাসিনার একজন বড় সমালোচক এবং পরামর্শকও বটে। কিন্তু সব সময় বোনকে সহযোগিতা সহায়তা করলেও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বা সরকারের ভিতরে তিনি কখনই আসেননি। এবার কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের মধ্যে একটি বড় অংশ শেখ রেহানাকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে দেখতে চান। তারা এ নিয়ে কথাবার্তাও বলছেন। সম্প্রতি গোপালগঞ্জের কমিটিতে শেখ রেহানাকে রাখা হয়েছে। শেখ রেহানা কি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসবেন এটি একটি বড় প্রশ্ন।
সজীব ওয়াজেদ জয়: আওয়ামী লীগের অতন্ত জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব হলেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা হলেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে নেই। যদিও রংপুরের পীরগঞ্জ আওয়ামী লীগের কমিটিতে তাকে রাখা হয়েছে। কিন্তু সেখানে থাকলেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে তিনি নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েই সজীব ওয়াজেদ জয় অবদান রাখেন এবং আওয়ামী লীগকে তরুণ সমাজের কাছে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে জয়ের ভূমিকা অপরিসীম। এবার কি তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসবেন?
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল: সায়মা ওয়াজেদ পুতুল শেখ হাসিনার এক মাত্র কন্যা এবং একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মনোবিজ্ঞানী এবং অটিজম বিশেষজ্ঞ। তিনিও সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে অবদান রাখেন, পরামর্শ দেন এবং তার কারণে বাংলাদেশ মানসিক স্বাস্থ্যে আজকে বিশ্বে একটি রোল মডেল হয়েছে। অটিজম মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্যের পেছনে রয়েছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তিনিও সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। স্বাস্থ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পুতুলের অবদান অনস্বীকার্য এবং বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের অগ্রযাত্রায় সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নন। এবার তিনি সম্পৃক্ত হবেন?
রেজওয়ান মুজিব ববি: রেজওয়ান মুজিব ববি শেখ রেহানার পুত্র। তিনিও রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নন। আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই এর অন্যতম নীতিনির্ধারক হলেন ববি এবং তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের গবেষণামনস্ক চিন্তাভাবনা প্রসারিত হয়েছে এবং আওয়ামী লীগের শিক্ষা এবং গবেষণার ক্ষেত্রে তার মূল্যবান অবদান রয়েছে। ববিও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসবেন কিনা এই প্রশ্ন আওয়ামী লীগের মধ্যে উচ্চারিত হয়। আর এই প্রশ্নের উত্তরগুলো দিতে পারেন একজনই। তিনি হলেন শেখ হাসিনা। তবে তিনি এই চারজনের কাউকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আনবেন কিনা সেটি বোঝা যাবে আওয়ামী লীগের আগামী কাউন্সিলে।
রেজওয়ান মুজিব ববি: রেজওয়ান মুজিব ববি শেখ রেহানার পুত্র। তিনিও রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নন। আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই এর অন্যতম নীতিনির্ধারক হলেন ববি এবং তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের গবেষণামনস্ক চিন্তাভাবনা প্রসারিত হয়েছে এবং আওয়ামী লীগের শিক্ষা এবং গবেষণার ক্ষেত্রে তার মূল্যবান অবদান রয়েছে। ববিও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসবেন কিনা এই প্রশ্ন আওয়ামী লীগের মধ্যে উচ্চারিত হয়। আর এই প্রশ্নের উত্তরগুলো দিতে পারেন একজনই। তিনি হলেন শেখ হাসিনা। তবে তিনি এই চারজনের কাউকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আনবেন কিনা সেটি বোঝা যাবে আওয়ামী লীগের আগামী কাউন্সিলে।