আজ ফুটবল তারকা নেইমার, রোনালদোর জন্মদিন

স্পোর্টস রিপোর্টার

দুজনই বর্তমান সময়ে বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। একজন খেলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আরেকজন ফরাসি লিগে। আজ ৫ ফেব্রুয়ারি দুজনেরই জন্মদিন! বলা হচ্ছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও নেইমারের কথা। রোনালদো পা দিলেন ৩৭ এ আর নেইমার ৩০ এ।

রোনালদোর জন্ম ১৯৮৫-এ, পর্তুগালের মাদেইরা শহরে। মা-বাবা নাম রেখেছিলেন তত্কালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের সঙ্গে মিল রেখে। ছোটবেলায় ছিলেন অত্যন্ত গোবেচারা, নিরীহ প্রকৃতির। শৈশবে সমবয়সী নয়, খেলতে পছন্দ করতেন বড়দের সঙ্গে। বড়দের সঙ্গে খেলার সময় অনেক বেশ লাথি খেতে হতো। তবুও হতোদ্যম হতেন না। ছোটবেলা থেকেই অনুভব করতেন ফুটবলার হতে হবে।

 

বর্তমানে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলছেন রোনালদো। এর আগে রিয়াল মাদ্রিদ ও জুভেন্টাসের মতো বড় বড় ক্লাবে খেলেছেন, দলকে এনে দিয়েছেন অসংখ্য শিরোপা।

 

ক্রিস্টিয়ানো বিখ্যাত তার গ্রিক দেবতাদের মতো শারীরিক গঠনের জন্য। তবে এর পেছনে রয়েছে তার কঠোর শ্রম আর নিয়মানুবর্তিতা। তাইতো ৩৭ বছর বয়সেও রোনালদো যেন এক অনুপ্রেরণার নাম। গোলার গতিতে ছুটতে থাকা এই নক্ষত্র, আরও বহুকাল ছড়িয়ে যাক তার জ্যোতি। জন্মদিনে আপাতত কামনা হোক এটাই।

 

এদিকে ব্রাজিলের সব কিংবদন্তীদের সবকিছুর প্যাকেজ যার মধ্যে, তিনি নেইমার ডা সিলভা সান্তোস জুনিয়র। মাত্র ৯ বছর বয়সে পেলের স্মৃতিবিজড়িত ক্লাব সান্তোসে নাম লেখান। ২০১৩ মৌসুমে সান্তোসের সঙ্গে গাঁটছড়া ছিন্ন করে যোগ দেন স্বপ্নের ক্লাব বার্সেলোনায়। তবে এরপর ট্রান্সফার ফির রেকর্ড গড়ে বার্সা থেকে নাম লিখিয়েছেন ফ্রান্সের ক্লাব পিএসজিতে।

 

১৯৯২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ব্রাজিলের মগি দাস ক্রুজেসে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন নেইমার। নেইমাররের উত্থানও অন্যসব ফুটবল গ্রেটদের মতোই। দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ করে ফুটবলকে ধ্যান-জ্ঞান ও পেশা হিসেবে বেছে নেয়া। নেইমারের বাবা নেইমার সিনিয়রের’ও ইচ্ছা ছিলো ফুটবলার হওয়ার, কিন্তু দারিদ্র্যের গ্যাঁড়াকলে সে স্বপ্ন পুরণ হয়নি তার। ভাগ্যান্বেষণে ব্রাজিলের মধ্যাঞ্চলের শহর সাও ভিনসেন্ট থেকে ১৯৯২ সালে সাও পাওলোর মগি দাস ক্রজেস শহরে এসেছিলেন তিনি। ওই দুঃসময়ে সিনিয়র নেইমারের ভালবাসার প্রতীক হিসেবে ঘর আলো করে আসে জুনিয়র নেইমার। এরপর স্বপ্নের পরিধি বেড়ে যায় তার। নিজের অপূর্ণ ইচ্ছা ছেলেকে দিয়ে পূরণের স্বপ্ন দেখতে থাকেন। এ কারণে অভাবের সংসার হলেও ছেলেকে এর আঁচ লাগতে দেননি। সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন উত্তরসূরির চাওয়া পূরণ করতে।

 

নেইমারের বিস্ময়কর উত্থানের শুরু ২০০৩ সাল থেকে। ওই বছর তিনি কিশোর প্রতিভা হিসেবে ক্লাব সান্তোসে যোগ দেন। পেশাদার ফুটবলের সঙ্গে তখন থেকেই পরিচিতি ব্রাজিলের বর্তমান স্বপ্নদ্রষ্টার। সেদিনের নেইমার আজ বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। নেইমার তো এমনই। কতশত লাখো কোটি ভক্তের নয়নের মণি। নেইমার তো এমনই। কতশত লাখো কোটি মানুষের অনুপ্রেরণা। দরিদ্র এক ঘর থেকে উঠে এসে ব্রাজিল কে ফুটবলবিশ্বে প্রতিনিধিত্ব করা, নিজেকে অনন্য এক উচ্চতায় আসীন করা নেইমার – কতশত যুবক বালকের এগিয়ে যাওয়ার উদ্দীপনা।

 

৫ ফেব্রুয়ারি, নেইমারের ৩০ তম জন্মদিন। কেবল তো ৩০! নেইমার এগিয়ে যাবে অনেক দূর। নিজেকে নিয়ে যাবেন অনন্য অসম্ভব এক উচ্চতায়, নাম লেখাবেন কিংবদন্তিদের তালিকায়। শুভকামনা, নেইমার।