আবারো ঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় চলতি ও তলবি ঋণ পরিশোধে আবারও বিশেষ সুবিধা প্রদান করেছে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২০ সালের চলতি ঋণের বকেয়া সুদ আগামী ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত ৬ কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ পাবেন গ্রাহকরা। একইসাথে ২০২০ সালের তলবি ঋণের কিস্তি আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিশোধের সুযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নিয়মে সুদ ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলে তাদের শ্রেণিকরণ বা খেলাপি করা হবে বলে জানা গেছে।

বুধবার (২৪ শে মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ ‘ঋণ শ্রেণিকরণ’ সার্কুলার জারি করা হয়েছে এবং সেগুলো তফসিলি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় ২০২০ সালের ১ লা জানুয়ারি থেকে ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি না দিলেও ঋণের শ্রেণিমান যা ছিল তাই থাকবে। বিরূপ মানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না। তবে, কোনো ঋণের শ্রেণিমানের উন্নতি হলে তা যথাযথ নিয়মে শ্রেণিকরণ করা যাবে। এক্ষেত্রে মেয়াদী ঋণসমূহের কিস্তি পরিশোধ সহজ করতে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

বহির্বিশ্বেও করোনা ভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় রফতানি বাণিজ্য কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যার ফলে নতুনভাবে কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা এবং একইসাথে ব্যাংকিং খাতে ঋণ প্রবাহের গতিধারা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করতে চলমান ও তলবি ঋণ/বিনিয়োগ পরিশোধের ক্ষেত্রে নির্দেশনা মানতে হবে।

নির্দেশনাগুলো হচ্ছেঃ যেসব চলমান ঋণ/বিনিয়োগের মেয়াদ ইতোমধ্যে অতিবাহিত হয়েছে এবং প্রচলিত নীতিমালার আওতায় ব্যাংক কর্তৃক নবায়ন হয়নি সেসব ঋণের ২০২০ সালের ১ লা জানুয়ারি থেকে ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত আরোপিত সুদ (আদায় না হলে) আছে তা ২০২১ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত ৬ টি সমান ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। এক্ষেত্রে ২০২০ সালের অনাদায়ী সুদ উল্লিখিত নিয়মে পরিশোধিত হওয়ার পাশাপাশি ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত আরোপিত সুদ ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে নিয়মিতভাবে পরিশোধ করতে হবে। এতে যেসব গ্রাহক এসব নিয়মে সুদ পরিশোধ করবে তাদের ঋণ ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মেয়াদোত্তীর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে না।

এছাড়াও তলবি প্রকৃতির ঋণ বা বিনিয়োগ ২০২১ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৮টি সমান ত্রৈমাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করা যাবে। এক্ষেত্রে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে কিস্তি পরিশোধিত হলে ঋণ বিরূপমানে শ্রেণিকরণ বা খেলাপি করা যাবে না।

কিন্তু সুবিধা নিয়ে কোনো ত্রৈমাসিককে প্রদেয় কিস্তি পরিশোধিত না হলে ওই ত্রৈমাসিক থেকে এ সুবিধা বাতিল হিসেবে গণ্য হবে এবং যথা নিয়মে ঋণ শ্রেণিকরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে উল্লিখিত চলমান ও তলবী ঋণ বা বিনিয়োগসহ বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৩/২০২১ এর আওতায় মেয়াদী ঋণের বিপরীতে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তি ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ৩০ জুনের মধ্যে পরিশোধ করলে ঋণ বিরূপমানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না।

উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণের ক্ষেত্রে এ সার্কুলারের নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে না।