ইমরানের তৃতীয় স্ত্রী রহস্যময়ী পীর বুশরা স্বামীর গদি বাঁচাতে একাধিক জ্যান্ত মুরগি পুড়িয়েছিলেন!

দেশ ডেস্ক : টানটান নাটকীয়তার মধ্যেই গদিচ্যুত হয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাক সংবাদমাধ্যম বলছে, তখ্‌ত ধরে রাখতে যতটা সক্রিয় ছিলেন ইমরান তার কিছু মাত্র কম ছিলেন না তার ‘পীর’ হিসেবে বহুল পরিচিত স্ত্রী বুশরা বিবি। বিরোধীরা বলছেন, স্বামীর গদি বাঁচাতে ‘কালো জাদু’, তুকতাক কিছুই বাদ দেননি বুশরা বিবি ওরফে পিঙ্কি পীর।
২০১৮ সালে একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানের ইমরান ও বুশরার বিয়ে হয়। বিয়ের আসর বসে বুশরার বান্ধবী ফারহা খানের বাড়িতে। বুশরা ইমরানের তৃতীয় স্ত্রী। এর আগে ইমরান ১৯৯৫ সালে বিয়ে করেন ব্রিটিশ ফিল্ম, টিভি প্রযোজক জেমাইমা গ্লোডস্মিথকে। ২০১৪ সালে প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়ক বিয়ে করেন ব্রিটিশ-পাকিস্তানি সংবাদিক রেহাম খানকে।
রেহামের সঙ্গে সম্পর্ক থাকাকালীনই ইমরানের বুশরার প্রেমে পড়েন। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী রেহাম দাবি করেন, বিয়ের আগে তিন বছর ধরে বুশরার সঙ্গে ডেটিং করে করতেন ইমরান। ইমরানও বুশরা বিবির প্রথম স্বামী নন। ১৯৮৯ সালে তিনি খাওয়ার মানেকা নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। মানেকা আবার বেনজির ভুট্টোর জমানার এক মন্ত্রীর ছেলে। ২০১৭ সালে মানেকার সঙ্গে বুশরার বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। প্রথম বিবাহ সূত্রে বুশরার তিন কন্যা এবং দুই পুত্র সন্তান রয়েছে।
পাকিস্তানে বুশরা বিবির আর এক পরিচয় ‘পিঙ্কি পীর’ হিসেবে। তাঁর দাবি, তিনি ‘অতিপ্রাকৃতের চর্চা’ করেন। তবে বিরোধী দলগুলির মতে, তিনি আসলে কালো জাদু, ডাইনিবিদ্যা ইত্যাদির চর্চা করেন। ইসলামে কালো জাদু বা ডাইনিবিদ্যা ইত্যাদির চর্চা সাধারণত নিষিদ্ধ। প্রাক ইসলামি আরব ও পারস্যে যে এই সব গুপ্তবিদ্যার চর্চা হত, তার প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু ‘আইয়াম-এ-জাহেলিয়া’ বা ‘অন্ধকারের যুগ’ অতিক্রান্ত হয়ে আরবে একেশ্বরবাদী ইসলাম প্রকট হলে এই সব চর্চার উপর বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়।
বিধি-নিষেধের আবডালেই অবশ্য চলতে থাকে কালো জাদু বা শয়তান উপাসনার মতো অকাল্টের চর্চা। প্রাতিষ্ঠানিক ইসলামের নজর এড়িয়ে বিভিন্ন অশুভ শক্তিকে জাগরণের চেষ্টাও করে চলেন এই সব গুপ্তবিদ্যা চর্চাকারীরা। বুশরা তথা পিঙ্কি পীর সম্পর্কে এই সব বিদ্যার চর্চাকারী হিসেবে এক প্রকার গণধারণা রয়েছে।
বুশরাকে বিয়ের আগেই পাক মসনদে বসেন ইমরান। পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি, পিঙ্কি ‘পীর’ নাকি আগেই বলে দিয়েছিলেন, তিনি পাক তখ্‌‌তে বসতে চলেছেন।
তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী মিল যাওয়ায় বুশরার প্রতিটি কথা মেনে চলতে শুরু করেন পাক প্রধানমন্ত্রী। জানা যায়, বিয়ের পর দলে সমান্তরাল শাসন চলাতে শুরু করেন ইমরানের স্ত্রী। দলে তাকে ‘গডমাদার’ বলা হত। কানাডাবাসী পাক লেখক তারেক ফতেহ্‌ একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘বুশরা বিবি যা বলেন, তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন ইমরান।’’
স্বামীর গদি বাঁচাতে বুশরা লাগাতার চেষ্টা করে গিয়েছেন। সপ্তাহখানেক ধরে ইমরান যখন নানা ভাবে গদি বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করে যাচ্ছেন্‌ তখন বুশরা নাকি বাড়িতে ‘কালো জাদুর’ প্রয়োগ করেছেন। বিরোধীদের দাবি, বাড়িতে একাধিক জ্যান্ত মুরগি পুড়িয়েছেন তিনি। এক পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি, বাডি়তে কয়েক টন মুরগি পুড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু তাতেও স্বামীর গদি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। কোনও বিশেষ শক্তিকে জাগাতে গেলে জীবন্ত প্রাণী উৎসর্গের বিষয়টি অবশ্যই অতি প্রাচীন জাদু-বিশ্বাস। পিঙ্কি ‘পীর’ কি সেই প্রাচীন বিদ্যা প্রয়োগ করে স্বামীর গদি বাঁচাতে তৎপর হয়েছিলেন? বুশরার কালো জাদু বা ডাকিনীবিদ্যা যে কোনও কাজেই আসেনি, তা সাম্প্রতিক ঘটনাবলিই জানাচ্ছে। মেয়াদ শেষ করার আগেই ইমরানকে গদি ছাড়তে হয়েছে। ‘পিঙ্কি পীর’ এবং তাঁর কালো জাদু এখন পাক নাগরিকদের হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে।