কাঁচা রাস্তায় দূর্ভোগ চরমে পাকা করার দাবি এলাকাবাসীর

হারুনুর রশিদ, নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদীর রায়পুরায় দেড় কিলোমিটার কর্দমাক্ত রাস্তায় কয়েক যুগেও উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগায় প্রায় ২০ হাজার মানুষের দূর্ভোগ চরমে।উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের করিমগঞ্জ নয়াহাটি গ্রামের কাঁচা রাস্তাটিতে কয়েক যুগেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
উপজেলা অফিস স্হানীয় সূত্রে জানাগেছে, করিমগঞ্জ নয়াহাটি গ্রামের পূর্ব দক্ষিণে নলবাটা- হাসনাবাদ বাজার কার্পেটিং রাস্তা এবং উত্তর পশ্চিম প্রান্তে নরসিংদী থেকে রায়পুরা মহাসড়ক রয়েছে। শুধু মাত্র দেড় কিলোমিটার রাস্তা দুই প্রান্তে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পাকা সড়ক হলেও ওই গ্রামের রাস্তাটি এখনও কাঁচা রয়েছে।

রাস্তাটি দীর্ঘদিন যাবত কর্দমাক্ত থাকায় যানবাহন চলাচল সহ সাধারণ মানুষের পা’য়ে হেঁটে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে কৃষি পুন্যসহ সবজি আনা-নেয়ার ভেনগাড়ী, রিক্সা, অটোরিক্সা, মিশুক, সিএনজি প্রায়শই উল্টে যাওয়াসহ ছোট বড় দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

গ্রামের উপর দিয়ে আমিরগজ ইউনিয়নের ১,৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ৮ টি গ্রামের করিমগঞ্জ, নলবাটা,ভাটিবদরপুর,জয়নগর,খলাপাড়া,বালূয়াকান্দি, দড়ি বালূয়াকান্দি,আগানগর, চরআড়লিয়াসহ আশপাশের মানুষ প্রতিদিন জেলা উপজেলা শহরসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে যাতায়াত করে।

গ্রামটিতে রয়েছে, সাড়ে তিন হাজার ভোটারের জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র, একটি আলিম মাদরাসা, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,একটি হাফিজিয়া মাদরাসা এবং এতিমখানা, দুইটি মসজিদসহ বেশকিছু সামাজিক সংগঠন রয়েছে।

জেলা সদরের সীমান্তবর্তী গ্রাম হওয়ায় প্রতিদিন এই রাস্তাদিয়ে শিল্প কারখানার কয়েক শতাধিক শ্রমিক ও দূধ সহ শবজি নিয়ে কৃষকরা চলাচল করে। তাছাড়াও এই রাস্তায় প্রতিদিন নরসিংদী সরকারি কলেজ সহ শহরে অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে।

৮ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের জেলা সদরে যোগাযোগের একটি মাত্র প্রধান ফাঁড়ি সড়ক।ফলে গুরুত্বপূর্ন এই কাঁচা রাস্তা পাকা না হওয়ায় প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের দীর্ঘদিন যাবত নানানভাবে ছোট বড় দূর্ঘটনাসহ চলাচলে দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য শহরের গেইট বাজারসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে রপ্তানি হয়।

স্হানীয় কৃষক আঃ জলিল বলেন, কৃষি প্রয়োজনীয় পূন্য আনা নেয়ার পথে খুব কষ্ট হচ্ছে। কর্দমাক্ত হওয়ায় পা’য়ে হেঁটে মাথায় বুঝাই করে পন্য বাজারজাত করতে হয়। সবজি বাজারে নিতে অনেক খবর বেড়ে যায়। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। ফলে অনেকের কৃষি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ফলে অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকে।

বাসিন্দা এস এম শরীফ বলেন, জেলা এবং উপজেলা সদরের বিভিন্ন হাসপাতাল এবং গ্রামের পাশে কমিউনিটি ক্লিনিকে বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ, গর্ভবতী রোগী চিকিৎসা নিতে হলে পায়ে হেটে চলাচল করতে হয়। অসুস্থ রোগী জরুরি বিপদে এম্বুলেন্সে চলাচল ত দূরের কথা পা’য়ে হেঁটে চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত রাস্তাটি পাকা করন চাই।
আমিরগজ ইউপি সংরক্ষিত নারী সদস্য খালেদা পারভীন বলেন,সড়কটি পাকা করনের জন্য বারবার ইউপি চেয়ারম্যানকে বলেও কাজ হয় নি। এতে আমার চেষ্টার কোনো কমতি ছিলোনা। রাস্তার আইডি নম্বর ৩৬৮৬৪৫১০৬ হয়েছে।

আমিরগন্জ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো কবিরুল ইসলাম বলেন, পূর্বের চেয়ারম্যান কতটুকু কি করলো তা জানিনা। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পিআইও অফিসের কথা বলবো।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাজী আঃ মোমেন বলেন, এলাকার কৃষি পন্যসামগ্রি, শিল্প- কারখানার শ্রমিক, মাদরাসা, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ কয়েক গ্রামের মানুষ ওই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করে। রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো বোরহান উদ্দিন মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে করোনা আক্রন্ত দীর্ঘদিন যাবত অফিসে নেই। অফিসে আসার পর এ বিষয়ে বলতে পারবো।
দ্রুত কাঁচা রাস্তা পাকা করার দাবি জানিয়েছেন স্হানীয় এলাকাবাসী।