গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে প্রস্তুত জবি

শেখ শাহরিয়ার হোসেন, জবি প্রতিনিধিঃ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের নানাবিধ হয়রানির শিকার হওয়া রোধ করতে এবং যাতায়াত, থাকা-খাওয়া সমস্যাসহ বিভিন্ন দুর্দশা লাঘবে প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে দেশের ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ১৭ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে এ পদ্ধতির যাত্রা শুরু হবে। আসন বিন্যাস অনুযায়ী গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে “এ” ইউনিটে পরীক্ষা দিবে দশ হাজার নয়শত পনেরো জন পরীক্ষার্থী।

জিএসটিভুক্ত সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে, ১৭ অক্টোবর ‘এ’ ইউনিটে বিজ্ঞান, ২৪ অক্টোবর ‘বি’ ইউনিটে মানবিক এবং ১ নভেম্বর ‘সি’ ইউনিটে বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের দুপুর ১২টা-১টা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার জন্য পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগেই সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে পৌঁছানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গুচ্ছ ভুক্ত ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এ’ ইউনিটভুক্ত ১০ হাজার ৯১৫ পরীক্ষার্থীর আসন নিশ্চিত করা হয়েছে। শুধু মাত্র আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েই এই সংখ্যক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে কোন আসন বিন্যাস হবে না।

তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যবিধি যথাযথ ভাবে পালনের জন্য বেশ কিছু উদ্যেগ নেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ডিজিটাল ব্যানারে রোল নম্বর, কেন্দ্র এবং ভবন নির্দেশক থাকবে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের সহায়তা দেওয়ার জন্য ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠেয় সকল ভবনের প্রবেশমুখে বিএনসিসিসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকগণ থাকবেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রীয়াশীল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনও ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের সহায়তা করবেন।

এ বিশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.মোস্তফা কামাল বলেন, পরীক্ষার্থীরা যেনো সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে পরীক্ষা দিতে পারে কোন বাধা-বিপত্তি ছাড়াই এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। পরীক্ষার দিন যেনো কোন প্রকার ঝামেলার সৃষ্টি ও যানজট না হয় এজন্য আমরা ডিএমপি কমিশনারের সাথে কথা বলেছি।আশে পাশে যতগুলো থানা আছে আমাদের শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য বলা হয়েছে। পরীক্ষা ঘিরে কোথাও অপ্রীতিকর কোন কিছু ঘটলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।

বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.রবীন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, যেহেতু আমরা একটা মহামারির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি সেজন্য শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মূল ফটক থেকে শুরু করে ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিকভাবেও মাস্ক, স্যানিটাইজার দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা সেগুলো ব্যবহার করবে। প্রতিটি বেঞ্চে একজন করে পরীক্ষার্থী বসানো হবে। পরীক্ষার্থীদের যেনো কোনো ভোগান্তি না হয় সেজন্য আমরা সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।

দেশের মোট ২৬টি কেন্দ্রে একযোগে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রগুলো হলো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। জিএসটিভুক্ত ভর্তি পরীক্ষা, ফলাফলসহ অন্যান্য সকল তথ্য http://gstadmission.ac.bd এই ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।