ঘাটাইলে বন্যার পানি উপেক্ষা করে ওরা স্কুলে যাচ্ছে ৫৪৪ দিনের নিরবতা ভাঙ্গতে

সৈয়দ মিঠুন, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার নারাংগাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়াসহ বান্ধুবীরা বলছিল, ওদের স্কুলে যাওয়ার পথটা মসৃণ নয়। দু’টি সড়কই তলিয়ে গেছে বন্যায়। কোথাও হাঁটু, আবার কোথাও কোমর পানি। ভেজা কাপড় নিয়েই ওরা হাজির। ওরা দেরি করে স্কুলে আসে না, শিক্ষার্থীরা আসে স্যারেরা আসার আগেই। বন্যার পানিও ওদের দমাতে পারেনি। ওরা বিদ্যালয়ে আসতে শুরু করছে ৫৪৪ দিনের নিরবতা ভাঙ্গতে। মেতেছিল আনন্দে। কখন যে স্কুলে আসার পথে ভেজা কাপড় শুকিয়ে গেছে ওরা টেরই পায়নি।

২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি এবং প্রাথমিক পর্যায় পিএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রতিদিন এবং অন্যান্য শ্রেণির ক্লাস সপ্তাহে পর্যায়ক্রমে নেওয়ার সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কিন্তু খোলার দিন সব শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত ছিল। স্বাস্থ্য সচেতনতায় প্রতিটি স্কুল গেইটে শিক্ষকসহ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারিদের দেখা গেছে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে। মুখে মাস্ক নিশ্চিত করে প্রবেশ করানো হচ্ছে ভেতরে। হাত ধোঁয়ার জন্য প্রতিটি শ্রেণি কক্ষের সামনে রাখা হয়েছে সাবান, বালতি ভর্তি পানি। অনেকের পড়নে ছিল না স্কুল ড্রেস।

উপজেলার ঝুনকাইল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র শরীফ হোসেন জানান, স্কুল ড্রেস ছোট হয়ে গেছে। নতুন করে বানানোর সার্মথ্য নেই। এমন আরও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনাকালে অভিভাবকদের আয় কমে যাওয়ায় সংসার চালাতেই নাকি বেগ পেতে হচ্ছে। নারাংগাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক খালিদ হাসান খোকন বলেন, স্কুল খোলায় শিক্ষার্থীরা উচ্ছ¡সিত। উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো। রাস্তা পানির নিচে থাকায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। স্কুলে যাওয়া আসার পথটি সহজ করার দাবী এলাকাবাসি, শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীদের।

মমরেজ গলগন্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হানিফ বলেন, সরকারি সব নির্দেশনা মেনেই শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করা হচ্ছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মানা ও পাঠদান হচ্ছে কিনা সেলক্ষ্য নিয়মিত বিদ্যালয় পরিদর্শন করে দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে উপজেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, প্রাথমিকের চারটি বিদ্যালয় মাঠে বন্যার পানি ওঠেছে কিন্তু পাঠদান বন্ধ রাখা হয়নি। মাধ্যমিকের ৫টি স্কুল, ৬টি মাদরাসা ও একটি কলেজ মাঠে বন্যার পানি প্রবেশ করেলেও পাঠদান চলমান রয়েছে।