চুয়াডাঙ্গায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে চাঁদাদাবী: ৬ জন গ্রেফতার

সালিকিন মিয়া সাগর, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ চুয়াডাঙ্গায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর অশ্লীল ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুঁমকি দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দিনগত রাত ২টার দিকে শহরের কেদারগঞ্জ ও এর আশপাশের এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে রাতে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলো- চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার কেদারগঞ্জ নতুনপাড়ার মৃত গোলাম হোসেনের ছেলে চক্রের মূল হোতা জুবায়ের হোসেন জীম (১৮), একই পাড়ার মনোয়ার হোসেনের ছেলে আপন হোসেন (১৭), জীবননগর বাসস্ট্যান্ডপাড়ার মৃত আবু শেখের ছেলে শিমরান হোসেন (১৭), মুন্সিপাড়ার কিতাব আলীর ছেলে রাকিব হোসেন (১৮), পলাশপাড়ার আনোয়ার হোসেনের ছেলে রায়হান উদ্দিন (১৭) ও মহিলা কলেজপাড়ার আশরাফুল ইসলাম শেখের ছেলে ইমরান শেখ (১৭)।

গ্রেফতারকৃতদের আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, প্রায় ৮ মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকের মাধ্যমে পৌর এলাকার সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর (১৪) সাথে কেদারগঞ্জে পাড়ার গোলাম হোসেনের ছেলে জুবাইর হোসেন জীমের (১৮) বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৫ মার্চ দুপুরে জীমসহ আরও বেশ কয়েকজন ওই স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে মহিলা কলেজপাড়ার একটি বাড়িতে আটকে রাখে। পরে জীম তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে ওই কিশোরীর বস্ত্রহীন ছবি ও ভিডিও ধারন করে তারা। এরপর থেকেই ধারনকৃত ওইসব অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুঁমকি দেখিয়ে ভুক্তভোগী মেয়েটির কাছে চাঁদা দাবী করে চক্রটি।

কোন উপায় না দেখে মেয়েটি লুকিয়ে তাদের দাবী মতো নগত ১৬ হাজার টাকা, একটি স্বর্ণের চেইন ও ব্যাচলেট দিতে বাধ্য হয়। এরপর গতকাল সোমবার তারা একই হুঁমকি দিয়ে ১ লাখ টাকা দাবী করে। পরে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায় মেয়েটি। গতকাল রাতে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে অভিযুক্ত জুবায়ের হোসেন জীমসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। পরে রাতে অভিযান চালিয়ে জীমসহ ৬জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের কথা স্বীকার করেছে তারা। ঘটনার সাথে জড়িত বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।