ঝিনাইদহের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নানা অনিয়মে উত্তপ্ত, ১১ ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

ওমর আলী সোহাগ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের কৃষি প্রশিক্ষণ ইউন্সিটিউট(এটিআই) এ ৩ ছাত্রকে ট্রান্সফার ও হলে ৮ ছাত্রের হোস্টেলে সিট বাতিলের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে ছাত্রছাত্রীরা। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় কলেজে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জানাগাছে, ২০২০ সালের প্রথম দিকে প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের হোস্টেলে রঙ করার কাজ করানো হয় ঠিকাদারের মাধ্যমে। এসময় ছাত্রদের ব্যক্তিগত বাক্স ভেঙে টাকা চুরিসহ জিনিসপত্র তসরুপ করে রঙ মিস্ত্রিরা। ছাত্রদের অভিযোগের ভিত্তিতে শহিদুল ইসলাম নামের এক শিক্ষককে তদন্তসহ মিমাংশার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছে, করোনার কারণে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে এটিআই’ও বন্ধ হয়ে যায়। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও এটিআইয়ের হোস্টেল বন্ধ রাখা হয়। হোস্টেলে থাকা ছাত্ররা এই বিষয়ে ক্ষোভ জানালে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাদের অবিভাবকদের কাছে ছাত্রদের বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয় এবং হোস্টেল এখনও পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে ছাত্ররা প্রতিষ্ঠান প্রধানের নির্দেশ উপেক্ষা করে হোস্টেলের তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রশাসন। প্রতিষ্ঠানের ৭ম সেমিস্টারের ছাত্র হাসিবুল হাসান শান্ত,শাওন চৌধুরী ও সোহেল নামের ৩ ছাত্রকে প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রান্সফার করা হয়েছে। এছাড়া ৭ম সেমিস্টারের সোয়েব আক্তার,আরাফাত সাজিম,ইমরান খান,৫ম সেমিস্টারের শীতল,শিশির,শাবাব,রিংকু ও অনিকের হোস্টেলের ছিট বাতিল করে নোটিশ বোর্ডে আদেশ ঝোলানো হয়েছে। এই ঘটনায় প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে ছাত্রছাত্রীরা। তারা জানিয়েছে, হোস্টেলে রঙ মিস্ত্রি কর্তৃক চুরি ও জিনিসপত্র তসরুপ হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের কোন ক্ষতিপূরণ দেয়নি। সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হোস্টেল খুলে দিলেও এটিআই কর্তৃপক্ষ এখনও হোস্টেল খুলে না দিয়ে ছাত্রদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনের প্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্তা নিয়েছে। এই বিষয়ে এটিআইয়ের অধ্যক্ষ বিনয় সাহা রবিবার সকালে তার কক্ষ থেকে জানান, সরকারের নির্দেশে সারাদেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রদের আবাসন ব্যবস্থা বন্ধ ছিল। নতুন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবার চালু হয়েছে। সঠিক সময়ে হোস্টেল খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু ছাত্ররা নাছোড়বান্দা হয়ে হোস্টেলের তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে তাই কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর হোস্টেলে রঙ মিস্ত্রি কর্তৃক চুরি ও জিনিসপত্র তসরুপের ঘটনা আমি গতকাল জানলাম।এই ঘটনার সময় আমি এই প্রতিষ্ঠানে ছিলাম না। ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রানা হামিদ জানান, ছাত্রদের হোস্টেল খুলে দেওয়ার দাবিটা যৌক্তিক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদের উপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে সঠিক বিচার করেনি কর্তৃপক্ষ। ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ করেছে, অব্যবস্থাপনার কারণে অনেক কর্মচারীরা এই প্রতিষ্ঠানে মাদকের আড্ডা চালায়। উৎপাদিত কৃষি পণ্য ও উৎপাদন কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম এই প্রতিষ্ঠানে।সব কিছুর সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে তারা।