টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন

সৈয়দ মিঠুন, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে এক গৃহবধূকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রসুলপুর (গর্জনাপাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ছফুরা বেগম (৪২)। সে গর্জনাপাড়া গ্রামের প্রবাস ফেরত লতিফ মিয়ার (৪৬) স্ত্রী। এ ঘটনায় রাতেই ছফুরার ভাই বাদী হয়ে নিহতের স্বামী লতিফ মিয়াকে একমাত্র আসামী করে ঘাটাইল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

নিহতের ছেলে মাদ্রাসা ছাত্র সাব্বির হোসেন বলেন, দুপুর একটার দিকে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে ফিরে ঘরে ঢুকেতেই বিষের গন্ধ পাই। একপাশের বিছানায় গলায় গামছা বাঁধা এবং মুখে স্কচটেপ লাগানো মায়ের নিথর দেহ পরে থাকতে দেখতে পান। পাশের বিছানাতেই উলঙ্গ অচেতন অবস্থায় পরে ছিলো তার বাবা।

পরে তার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তার বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং পুলিশে খবর দেয়। বর্তমানে সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাদীন রয়েছে।

খবর পেয়ে পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। স্ত্রীকে হত্যার পরে স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

নিহতের মামা আব্দুস ছামাদ বলেন, ভাশুর রশিদ মিয়া এবং ননদের স্বামী দুলালের সাথে নিহত ছফুরার পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে তার স্বামী সন্দেহ করতো। এনিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। শেষপর্যন্ত মেয়েটাকে ওরা মেরেই ফেললো।

নিহত ছফুরার মামাতো ভাই প্রতিবেশী নুরু মিয়া বলেন, সকাল সাড়ে দশটার দিকে ছফুরা আমাদের বাড়িতে আসে। তার স্বামী তাকে পরপুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্ক আছে সন্দেহ করে প্রায়ই ঝগড়া করে। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই ঝগড়া শুরু করেছে। অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছে। আমি দুলাভাইকে বুঝিয়ে বলবো বললে সে এগারোটা নাগাদ বাড়ি চলে আসে। এর কিছুক্ষণ পরেই এই খবর শুনতে পাই।

এদিকে ঘটনার পরপরই গোপালপুর সার্কেলের এএসপি সোহেল রানা, ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ আজহারুল ইসলাম সরকার পিপিএম, সাগরদিঘী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম, ধলাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ীর উপপরিদর্শক এসআই সিদ্দিকুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের আশ্বাস দিয়ে ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জ আজহারুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে এটা একটি পরিষ্কার হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে। এবিষয়ে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। দ্রুত তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।