নোয়াখালী প্রতিনিধি ঃ নোয়াখালী জেলার সোনাপুর থেকে চৌমুহনী পর্যন্ত প্রতিদিন ৫০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করে মাসে ২কোটি ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে চাঁদাবাজরা। বুধবার ডিবি পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে ১০ চাঁদা আদায়কারীকে গ্রেফতার করলেও গড ফাদাররা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে রয়ে গেছে। নোয়াখালী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ওসি কামরুজ্জামান শিকদার জানান, জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেনের নির্দেশে বুধবার জেলা ডিবি পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে বেগমগঞ্জ ও সদরের বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদা আদায়কারী ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে আদায় করা নগদ টাকা, অবৈধ চাঁদার রশিদ যাতে কোন সীল বা স্বাক্ষর নেই শুধু টাকার পরিমান লেখা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আবদুর রহিম জানায়, তারা নেতাদের নির্দেশে সোনাপুর স্ট্যান্ড, মাইজদী ইসলামিয়া সড়ক মোড়, সুধারাম থানার সামনে, মাইজদী বাজার, বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা প্রতি সিএনজি অটোরিক্সা থেকে ১০ টাকা করে আদায় করছে এবং রাতেই নেতাদের কাছে রশিদ হিসাব করে টাকা বুঝিয়ে দিলে তারা ৩/৪ শত টাকা করে বেতন পান। সে আরো জানায় এটা ছাড়াও রাস্তায় ৩ থেকে ৪ ভাবে চাঁদা আদায় করা হয়। পৌর টোল, শ্রমিক কল্যাণ তহবিল, মালিক কল্যান তহবিল, হাইওয়ে পুলিশের চাঁদা ও বীট চাঁদা। জেলা রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি সূত্রে জানান, নোয়াখালী জেলায় ১৩ হাজার বৈধ সিএনজি রয়েছে। আরও ৩/৪ হাজার রেজিষ্ট্রিবিহীন রয়েছে বলে অনুমান করছে। জেলা ট্রাফিক সূত্রও এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন যে, এ ১৩ হাজারের কিছু কিছু গাড়ী আবার জেলার বাহিরেও চলাচল করে থাকে। আর অবৈধ গাড়ীতো কোন হিসাব-ই নাই। এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা হয়ে চৌমুহনীর করিমপুর সড়ক এবং পূর্ব বাজার পর্যন্ত ৫টি পয়েন্টে ১০ টাকা করে হিসেব করলে এ ১৬ হাজার সিএনজি থেকে প্রতিদিন ৮ লক্ষ টাকা চাঁদা উঠে যা মাসে চাঁদার টাকার পরিমান দাঁড়ায় ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ডিবির হাতে গ্রেফতারকৃত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চাঁদা আদায়কারী জানায়, সোনাপুরে সিএনজি স্ট্যান্ডে সিএনজি সালাউদ্দিন, চৌমুহনীতে সিএনজি মাসুদ এবং মাইজদী বাজার এবং সুধারাম থানার সামনে থেকে আদায়কৃত টাকা রাতে লিটন ও মঈন নিয়ে যায়। নেতারা লাখ লাখ টাকা খায় আর আমরা পাই ৩/৪ শত টাকা বেতন। সে আরো জানায়, এ চাঁদা তুলে মাইজদী বাজারের মঈন ছয়তলা ভবনের ভিত্তি দিয়ে দোতলা বাড়ি করেছে। অনেক জায়গা জমিন কিনেছে। চৌমুহনীর মাসুদ ও সোনাপুরের সিএনজি সালাউদ্দিন কোটি কোটি টাকার মালিক। পুলিশ তাদের ধরে না। শুধু আমারমত লাইনম্যানদের গ্রেফতার করে। নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন এসব চাঁদাবাজির খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তিনি সবখোঁজ খবর নিয়েই ডিবিকে অভিযানে পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে পৌরসভার টার্মিনাল থাকলে টার্মিনালের ভিতর থেকে তারা পৌর টোল আদায় করতে পারবে কিন্তু কোন সড়কে যানবাহন থেকে কোন চাঁদায় আদায় করতে দেয়া হবে না।