মনিরুল ইসলাম, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ করোনা মহামারীতে কঠোর লকডাউনের মধ্যেও পাইকগাছার সহস্রাধিক শ্রমজীবি মানুষ ধান কাটার মৌসুমকে ঘিরে শ্রম বেঁচতে গেছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। স্থানীয় ইউপি মেম্বার-চেয়ারম্যানদের প্রত্যয়নে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমোদন নিয়ে এসব ধান কাটা শ্রমিকরা ইতোমধ্যে চলে গেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে অনুমতির বাইরেও উপজেলার বহু মানুষ স্ব-স্ব এনআইডি সাথে নিয়ে মৌসুমে নিজেরা বিক্রি হতে বেরিয়ে পড়েছে শ্রম বিক্রির হাটে। প্রতি বছর বোরো আবাদ ও কর্তন মৌসুমকে সামনে রেখে এ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ শ্রম বিক্রি করতে চলে যায় দেশের বিভিন্ন উপজেলায়। এদের অনেকে আগে থেকেই মালিকের সাথে চুক্তিভিত্তিক আবার অনেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিজেদের শ্রম বিক্রি করতে উপস্থিত হয় চিহ্নিত মোকামে। সেখানে কৃষক মালিকের সাথে চুক্তি শেষে চলে যায় যার যার গন্তব্যে। ইতোমধ্যে ধানকাটা মৌসুম শুরম্ন হলেও লকডাউনে যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতায় চরম ভোগান্তির মধ্যেও তারা ছুটে চলেছেন যার যার গন্তব্যে। তবে ধান কর্তন মৌসুমকে সামনে রেখে সরকার সর্বাত্নক লকডাউনের মধ্যেও স্ব স্ব এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশক্রমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অনুমতি সাপেক্ষে ধান কাটতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। চলতি দ্বিতীয় দফার লকডাউনে কড়াকড়ি আরোপ থাকলেও ধান কাটা শ্রমিকদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনার আলোকে ইতোমধ্যে সহস্রাধিক শ্রমিক গোপালগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও যশোর, নড়াইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ধান কাটার জন্য বেরিয়ে পড়েছে। এছাড়া উপজেলা সদর থেকে দূরে বসবাসরত অনেকেই যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়েই শুধুমাত্র এনআইডি কার্ড সাথে করে চলে গেছে শ্রমবিক্রির হাটে। এ ব্যাপারে উপজেলার কপিলমুনির প্রতাপকাটি গ্রামের শ্রমিক আঃ সাত্তার বলছিলেন, এলাকার ৮ জনের একটি টিমের সাথে এবার ধান কাটতে যাচ্ছেন যশোরের বাঘার পাড়ায়। তবে ঝামেলার ভয়ে ইউএনওর অনুমতি না নিয়েই স্ব স্ব পরিচয়পত্রের ফটোকপিসহ যাচ্ছেন তারা। গতকাল কাজের উদ্দেশ্যে চলে গেছেন তারা। তবে ঘোষণা অনুযায়ী প্রথমে আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রত্যয়ন নিয়ে পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছ থেকে অনুমোদন নেওয়ার কথা রয়েছে ঘোষণায়। তবে সকলেই অনুমতি পত্র সংগ্রহ না করায় ঠিক অনুমান করে বলা যাচ্ছেনা এলাকা থেকে কি পরিমাণ শ্রমিক বাইরে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সহস্রাধিক শ্রমিক ইতোমধ্যে বাইরে চলে গেছে। প্রসঙ্গত, দেশের প্রায় সব অঞ্চলে ধানের পলন ভাল হওয়ায় এবার শ্রমিকের চাহিদার পাশাপাশি শ্রমের মূল্য অপেক্ষাকৃত বেশি। শ্রমিকদের আশা আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশে গত বারের চেয়েও বেশি উপার্জন শেষে বাড়ি ফিরতে পারবেন তারা।