পাইকগাছায় মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলনে কৃষকদের মুখে হাসি

মনিরুল ইসলাম, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ
চলতি মৌসুমে পাইকগাছায় মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কম খরচে অধিক মুনাফায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। ধানের তুলনায় তিনগুণ বেশি ফলন ও ভাল দাম পাওয়ায় মিষ্টি আলু চাষে ঝুঁকছেন উপকুলীয় জনপদের কৃষকরা। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানান, এ মৌসুমে উপজেলার গড়ইখালীতে প্রায় ১৮ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের মিষ্টি আলুর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন খরচ কম ও বেশী লাভ হওয়ায় ধান চাষের পরিবর্তে মিষ্টি আলু চাষে ঝুঁকছে চাষিরা। সরেজমিনে দেখাযায়, উপজেলার গড়ইখালী ইউনিয়নে আমেরপুর, বাইনবাড়িয়া, হুগলারচক সহ বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কথা হয় বাইনবাড়িয়ার রবেন্দ্র নাথ, উদয়, কার্ত্তিক, সুকুমার মন্ডলে সাথে। তারা জানান, আমাদের এখানে এর আগে এক ফসলের আমন ধানেরর চাষ হতো। আর বছরের প্রায় বাকী সময় জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকত। তাছাড়া ধান চাষে পরিশ্রমের পাশাপাশি খরচও অনেক বেশী। তাই চলতি বছর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় মিষ্টি আলুর চাষ করেছি। এক বিঘা জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ করতে মাত্র ৫থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে পরিবেশে বিঘা প্রতি ৮০থেকে ৯০ মণ আলুর ফলন পাওয়া যায়। আর বর্তমান বাজারে মিষ্টি আলু মণ প্রতি ৮শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন অনেক বেশি, বাজারে দামও ভাল পাওয়ায় মুনাফা দ্বিগুন হবে আশা করছি। তবে চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টিতে ব্যাপক পানি সংকটের সম্মূখীন হতে হওয়ায় এ সমস্যার সমাধানে কৃষি অফিসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। এ ব্যপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় সর্বমোট দেড় শতাধিক কৃষক ১৮ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষাবাদ করেছেন। প্রতি হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু উৎপাদন হয় ২৪ মেট্টিক টন। আর প্রতি হেক্টর জমিতে ধান উৎপাদন হয় ৬.৫ বা ৬.৬ মেট্টিক টন। মিষ্টি আলুতে উৎপাদন খরচ অনেক কম। তুলনামূলক পরিশ্রম অনেক কম করতে হয়। তাছাড়া পোকা-মাকড়ের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আর পরিত্যক্ত জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করলে ধানের চেয়ে তিনগুণ লাভ হয়। অগ্রাহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহে থেকে শুরু হয় মিষ্টি আলুর চারা বপন। ফাল্গুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে থেকে মিষ্টি আলু মাটির নিচে পরিপক্ক হয়। আর চৈত্র ও বৈশাখ মাস আলু তোলায় ব্যস্ততা থাকে চাষিরা ও পরিবারের লোকজন। এখন মাঠ থেকে আলু তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে কৃষকরা। তাছাড়া অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে দ্বিগুন ফলনের পাশাপাশি বাজারে ভাল দাম পাওয়ায়য় কম খরচে অধিক মুনাফায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। পানি সমস্যার সমাধানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।