পাহাড় কেটে অপরিকল্পিত এলজিইডির তৈরি সেতুর কাজ বন্ধ করার দাবি

কামরুল ইসলামঃ বান্দরবানের রুমা উপজেলায় পাহাড় কেটে অপরিকল্পিত একটি সেতু তৈরি করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)।এই বিষয়ে পার্বত্য বান্দরবন জেলার জনসাধারণ বলেন এই ব্রিজ টা করতে এখনো পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কিন্তু এরপরও পাহাড় কাটা শুরু করেছে এলজিইডি ।

এই বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুস সাদাত মো. জিল্লুর রহমান বলেন, রুমা মুখ থেকে উপজেলার গ্যালেংগা পর্যন্ত এলাকায় যোগাযোগ সুবিধার জন্য ‘৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে দুর্গম পলিকা খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে । কিন্তু সেতুটি ব্যবহারের কোনো সংযোগ সড়ক ছিল না। এখন পাহাড় কেটে সংযোগ সড়ক তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংযোগ সড়ক ছাড়াই এলজিইডি গত জুন মাসে সেতুটি তৈরির কাজ শেষ করেছে। ‘

‘পাহাড় কাটা ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে উন্নয়ন অগ্রহণযোগ্য ’ জানিয়ে চট্টগ্রাম পরিবেশ বিভাগের সহকারী পরিচালক শ্রীরুপ মজুমদার বলেন, ‘এলজিইডি সম্প্রতি বান্দরবানের দুর্গম রুমা উপজেলায় রাস্তা নির্মাণের জন্য পাহাড় কাটার জন্য আবেদন করেছিল। ‍কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে তাদের এখনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কিন্তু এর মধ্যেই পাহাড় কাটা শুরু করেছে এলজিইডি।’

উল্লেখ্য, রুমা মুখ থেকে গ্যালেংগায় যাতায়াতে স্থানীয়রা সাঙ্গু নদী ব্যবহার করেন। শুকনো মৌসুমে জলপথ বন্ধ হয়ে গেলে নদীর পাড় দিয়ে তারা চলাচল করেন। নতুন সেতু ও সড়কের ব্যাপারে স্থানীয়রা বলছেন, পাহাড় কাটা ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয় এমন কিছু তারা মেনে নেবেনা এবং তারা এমন ব্রিজ বা সড়ক চান না।

পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন করতে গেলে পাহাড় তো কাটতেই হবে মন্তব্য করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, গত রোববার আমি নবনির্মিত সেতুটি পরিদর্শনে গিয়ে দেখি ‘সেতুটির পাশে একটি পাহাড় আছে। সেখানে কোনো রাস্তা নেই। কিন্তু সেতুটি অপরিকল্পিত ছিল না।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান ‘পাহাড় কাটার কারণে প্রাকৃতিক ভারসাম্য এবং জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়। পাহাড় কেটে রাস্তা করার ফলে মাটির গাঁথুনির ক্ষতি হয়। এর ফলে ভূমিধসের সম্ভাবনা বাড়ে। তাই এমন রাস্তা বা ব্রিজ সরকার বা জনগনের জন্য কখনো মঙ্গল হতে পারেনা তাই এই পাহাড় কাটা বন্ধ করা দরকার।