পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে প্রবাসীদের জন্য ২৫% শেয়ার বরাদ্দের উদ্যোগ

দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে বেসরকারি এনআরবি ব্যাংকগুলোর প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে প্রবাসীদের জন্য ২৫ শতাংশ শেয়ার বরাদ্দ রাখার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এমনকি ভবিষ্যতে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ক্ষেত্রে আইপিওর সিদ্ধান্ত হলে তাতে অভিবাসী কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট হারে শেয়ার বরাদ্দ রাখা হবে। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নে অনুমোদনের জন্য অর্থমন্ত্রীর কাছে একটি সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করা গেলে একদিকে দেশের উদ্যোক্তাদের তহবিল সংকটের সমাধান হবে। অন্যদিকে প্রবাসীরাও লাভবান হবেন। এদিকে বিদেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। তবে বৈধ পথে আরো বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স আনতে চায় সরকার। এজন্য স্বল্প আয়ের প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রেরণ ফি মওকুফ করার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে ফি কমানোর প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। এজন্য প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ৫০০ ডলার কিংবা এর চেয়ে কম রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীদের প্রচলিত ২ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি অতিরিক্ত আরো ১০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়ার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রস্তাবও অনুমোদনের জন্য একই সারসংক্ষেপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রাথমিক শেয়ারে প্রবাসীদের জন্য শেয়ার সংরক্ষণের বিষয়টি যৌথ মূলধনি কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তরের আওতাধীন। তবে এ বিষয়ে সংস্থাটি তাদের মতামত দিয়েছে। তারা বলছে, কোম্পানি আইনে অভিবাসী কর্মীদের জন্য ২৫ শতাংশ প্রাথমিক শেয়ার বরাদ্দ রাখার বিষয়ে কোনো বিধিবিধান নেই। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেটিংকৃত সংঘস্মারক ও সংঘবিধিতে বর্ণিত উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার পরিবর্তন বা পরিবর্ধনক্রমে নিবন্ধনের কোনো সুযোগ নেই। কোম্পানির নিবন্ধনকালীন উদ্যোক্তা শেয়ার কিংবা পরবর্তী সময়ে যেকোনো শেয়ার বরাদ্দের বিষয়টি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ও প্রযোজ্য কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত হয়ে আইনানুগভাবে এ দপ্তরে দাখিল করলে তা রেকর্ডভুক্ত করা হয় মাত্র। যেহেতু এনআরবি, এনআরবি কমার্শিয়াল ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ২০১৩ সালে নিবন্ধিত, সেহেতু ২০১৯ সালের ২৫ আগস্টের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানবিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এসব ব্যাংকের আইপিওতে প্রবাসীদের জন্য ২৫ শতাংশ শেয়ার বরাদ্দ রাখা হলে তাদের কোনো আপত্তি নেই।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। এগুলো বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয় বর্তমানে কাজ করছে। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো আমাদের হতে আসেনি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এলেই তা বাস্তবায়নে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।