বন্ধ হচ্ছে ডেটা চুরিতে ব্যবহৃত ফিশিং ওয়েবসাইট

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশের বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার প্রস্তুতি হিসেবে তথ্য সংগ্রহে হ্যাকারদের পাঠানো বেশকিছু ভুয়া বা ফিশিং ওয়েবসাইট শনাক্ত করা হয়েছে। প্রথমে এগুলোর কার্যক্রম অচল এবং পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরকম আরও কিছু ভুয়া (ফিশিং) ওয়েবসাইটের অস্তিত্ব মিলেছে বিভিন্ন সংস্থার ওয়েবপেজে।সেগুলোর কার্যক্রমও অচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রণে আসার পর এগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে এসব ভুয়া ওয়েবসাইট কোথা থেকে কীভাবে এলো বা কে পাঠাল, তা শনাক্ত করতে সাইবার ল্যাবের মাধ্যমে অনুসন্ধান চলছে।

একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়, ভুয়া বা ফিশিং ওয়েবসাইট সম্পর্কে ইতোমধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক তাদের গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে গ্রাহকদের সতর্ক করেছে। এছাড়া ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, বিকাশসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শাখা ও এটিএম বুথের কর্মকর্তাদের সতর্ক করার পাশাপাশি গ্রাহকদেরও সতর্ক করা হয়েছে।

২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সরকারের ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (সার্ট) থেকে দেশের আর্থিক খাতসহ সরকারি খাতের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার আশঙ্কায় উচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা জারি করে। তারা ফরেনসিক সাইবার ল্যাবের মাধ্যমে অনুসন্ধান করে জানতে পারে যে, বেশকিছু ফিশিং ওয়েবসাইট তৈরি করে অনলাইনে পাঠানো হয়েছে। সেগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহ করছে।

এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন গ্রাহকের আইডি, পিন নম্বরসহ গোপনীয় তথ্য। এগুলো সংগ্রহ করে তারা সাইবার হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। এরপরই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয়। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের সতর্ক করতে মোবাইল ফোনে খুদেবার্তা পাঠায়, ভেরিফাইড ওয়েবপেজে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, ফেসবুকে প্রচার চালায়।

এ প্রসঙ্গে সরকারের ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমের (সার্ট) প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ বলেন, ফিশিং ওয়েবসাইট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাসওয়ার্ড ও ইউজার নেম চুরি করছে। এ ছাড়া আরও কিছু তথ্য চুরি করে সেগুলো হ্যাকার গ্রুপের কাছে পাঠাচ্ছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে হয়তো হ্যাকার গ্রুপটি সাইবার হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিতে পারে।

উল্লেখ্য যে, ভুয়া (ফিশিং) ওয়েবসাইট হচ্ছে এক ধরনের ভুয়া ওয়েবসাইট। কোনো একটি ওয়েবসাইটের হুবহু নকল বা একইরকম। এগুলো হ্যাকাররা তৈরি করে অনলাইনে ছাড়ে। গ্রাহকদের জন্য নানা ধরনের লোভনীয় অফার দেয়। গ্রাহকরা এসব লোভে পড়ে ভুয়া ওয়েবপেজে নিজেদের গোপনীয় তথ্য দিয়ে দেয়। সেগুলো ব্যবহার করে গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা চুরি করে নেয়।