বোরো ধান সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা পূরন হয়নি মাধবপুরে

লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের মাধবপুরে বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা পূরন হয়নি। সরকারি মূল্যের চেয়ে বাজার মূল্য বেশি ও কাছাকাছি থাকায় অনেকেই সরকারি গুদামে ধান দেননি। এতে লক্ষ্য মাত্রা পূরন করা সম্ভব হয়নি বলে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান। উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায় উপজেলার দুইটি সরকারি খাদ্যগুদাম রয়েছে। একটি নোয়াপাড়া ইউনিয়নে অন্যটি মাধবপুর পৌর শহরে। চলিত বছরের ২৮ এপ্রিল থেকে ৩১আগষ্ট পর্যন্ত ছিল বোরো ধান সংগ্রহের তারিখ। এ সময়ের মধ্যে সরকারি অ্যাপসের মধ্যেমে ধান সংগ্রহের কথা ছিল। লক্ষ্য মাত্রা ছিল এ উপজেলায় ৯৯০মেট্রিক টন। কিন্ত দুই গুদামে ক্রয় করা হয়েছে মাত্র ৪৯০মেট্রিক টন। সংগ্রহের হার ৪৫.৪৫ শতাংশ।

মাধবপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপ খাদ্য পরিদর্শক মোঃ ছুরত আলী দেশ কে বলেন ধান ক্রয়ে সরকারি মূল্যের চেয়ে হাটের মূল্যের বেশি থাকায় কৃষকেরা ধান দিতে আগ্রহ নেই। এছাড়াও প্রান্তিক কৃষকেরা গুদামের ধান পৌঁছাতেই পরিবহন খরচ বেশি হওয়ার কারনে ধান দেননি তারা। নোয়াপাড়া খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পরিদর্শক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন প্রথম বারের মতো সরকার প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের জন্য অ্যাপস চালু করছিল। লটারির মাধ্যমে কৃষক বাচাই করা হয়েছে। ধান সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন ভাবে প্রচার প্রচারনা করা করা হয়েছে। তিনি বলেন এ উপজেলা বিভিন্ন শিল্প কারখানার স্থাপন হওয়ার কারনে এ উপজেলায় বোরো ধানের চাষাবাদ চেয়ে বি ২৮ ও বি ২৯ধান চাষাবাদ বেশি হয়। এ কারনে হয়তো ধান সংগ্রহের হার কম।

স্থানীয় কৃষকেরা বলেন সরকার কৃষকির কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করতে হলে হাটের মূল্যের চেয়ে বেশি দিতে হবে। তাহলে কৃষক গুদামে ধান দিবে।ছাতিয়াইন গ্রামের ফজলু মিয়া বলেন কৃষকের কাছে দামি ফোন নেই। এবার ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরকার ধান সংগ্রহ করেছে। এটি কৃষকের কাছে ঝামেলা মনে হয়।

কালিকাপুর গ্রামের কৃষক সায়েদুর রহমান বলেন সরকারি গুদামে ধান দিতে না বিড়ম্বনায় পরতে হয়। ধান দিলে বলে শুখানো হয়নি। ধানের বিভিন্ন ধরনের মিশ্র ধান রয়েছে। এ সব করনে কৃষক ধান দিতে আগ্রহ কম দেখায়। মাধবপুর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবুল হোসেন বলেন সরকারি মূল্যের সাথে হাটের মূল্যে কাছাকাছি থাকায় লক্ষ্য মাত্রা পূরন হয়। আমাদের লক্ষ্য মাত্রা পূরন করেছেন জেলা খাদ্য গুদামে।

মাধবপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন হাসান, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকাকে বলেন, মাধবপুর উপজেলায় ধান উৎপাদনে কোন ঘাটতি নেই। লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে ধান সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা পূরণ না হওয়ার কারন হল কৃষকেরা ব্যবসায়ীদের কাছে কাচা ধান বিক্রি করতে পারছে। সরকারে দেয়া নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দামও পেয়েছে ভাল। এছাড়া গুদামে ধান দিতে পরিবহন খরচ বেশি, শুকনো ধান দিতে হয়েছে। কোন মিশ্র ধান সংগ্রহ করা হয়না। এ সব কিছু কৃষক ঝামেলা মনে করে গুদামে ধান দিতে আগ্রহ হারিয়েছে। তাই ধান সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা পূরন হয়নি।