ভেঙ্গে পড়েছে পাইকগাছার তৃণমূলের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রীক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা

মনিরুল ইসলাম, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ ভঙ্গুর অবকাঠামো অবস্থা, জনবল থেকে শুরু করে নানা সংকটে ভেঙ্গে পড়েছে পাইকগাছার তৃণমুলের স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা। কোথাও ডাক্তার নেই তো বিল্ডিং আছে। আবার কোথাও ডাক্তার আছে তো বিল্ডিং নেই। বিভিন্ন নেই এর ভীঁড়ে এগিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবন উপকূলীয় লোনা পানির জনপদ পাইকগাছার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।

তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। যার অধিকাংশই লোনা পানি বেষ্ঠিত দূর্গম অঞ্চল। উপজেলা সদর থেকে প্রতিটি ইউনিয়নের ১০/১৫/২০/২৫ কিঃমিঃ পর্যন্ত। যেকোন স্বাস্থ্য সমস্যায় নূন্যতম প্রাথমিক সেবা পেতেও যেতে হয় উপজেলা কিংবা জেলা সদরে। সরকার স্বাস্থ্য-সেবা সাধারণের দোর গড়ায় পৌছে দিতে প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন করেছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে ১ জন ডাক্তার, একজন পরিবার কল্যাণ নির্দেশিকা, একজন নিরাপত্তা প্রহরী ও একজন আয়া থাকার কথা। অথচ কোন কোন কেন্দ্র চালানো হচ্ছে একজন মাত্র নৈশ প্রহরী আবার কোথাও একজন মাত্র ডাক্তার দিয়ে। তৃণমূলের স্বাস্থ্য সেবার এমন চিত্র জানান দেয় পাইকগাছার সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে।

সরেজমিনে প্রতিবেদনকালে দেখা যায়, উপজেলার গড়ইখালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারর কল্যাণ কেন্দ্রটির করুন অনস্থা। কেন্দ্রের মূল ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। একজন মাত্র কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ছাড়া আর কোন জনবল নেই সেখানে। প্রতিদিন ৪০/৫০ জন রোগী সেবা নিচ্ছেন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে।

সর্বশেষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ আম্ফান ও বুলবুলের আঘাতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অধিনে একটি তেঁতুল ও একটি শিরিশ গাছ উপড়ে পড়ায় দীর্ঘ দিনেও তা অপসারনের কোন ব্যবস্থা নেইনি কর্তৃপক্ষ। এতে করে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকার গাছ প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে। একদিকে সরকারি সম্পদ নষ্ট হচ্ছে,অন্যদিকে গাছগুলো অপসারণ না করায় ঝুঁকি বেড়েছে মূল ভবনের।

প্রসঙ্গত, উপজেলার লতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি বন্ধ রয়েছে প্রায় দু’বছর। স্থানীয়রা জানান, সেখানে মাত্র একজন নৈশপ্রহরী রয়েছেন। যিনি মাসে দু’একবার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে ঝাড়ু দিয়ে আসেন। ডাক্তারসহ জনবল শূণ্যতার কারণে স্বাস্থ্য সেবায় তৃণমূলের ভরসার একমাত্র কেন্দ্রটি বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ভোগান্তিতে রয়েছেন সেখানকার অধিবাসীরা।

উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা এসএম কবির হোসেনের কাছে এব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।

এ ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকীসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।