মনের আক্ষেপ,অবিশ্বাস্য হলেও কথা সত্য

সাইফুল ইসলামঃ অবিশ্বাস্য হলেও কথা সত্য। ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্য তার নাম উল্লেখ করা যাচ্ছে না। বাসা ভাড়া, পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ বিল দিতেই ৭০০০/- টাকা চলে যায়। চাল ডাল তেল লবণ শাক সবজি মাছ মাংস কিনতে আরো ৭০০০/- চলে যায়। বৃদ্ধ / অসুস্থ মা বাবাকে ঔষধপত্র কিনে দিতে কিংবা চা পান খাওয়ার টাকা দিতেই চলে যায় আরো তিন হাজার। ছোট ভাই বোনদের নাহয় নাই দিলাম। বাকি ৬৫০ টাকা চলে যায় মোবাইলের ফ্লেক্সিলোডে। মাসে একদিন যে বউ বাচ্চা নিয়ে ঘুরতে যাবেন তার টাকা নাই। হঠাৎ করে দুই একটা বিয়ের দাওয়াত, খাৎনা কিংবা মুখে ভাতের দাওয়াত কার্ড অথবা কোন বন্ধু বান্ধব – কলিগের বাসায় দাওয়াত খেতে যেতে হলে মাথায় হাত পরে। রাস্তা ঘাটে পরিচিত কিংবা শুভাকাঙ্ক্ষী কারো দেখা হলে শুন্য পকেটে হোটেলে চা খাওয়ার প্রস্তাব টা দিতেও ভয় লাগে। ওসব না হয় বাদ দিলাম নিজে, যে চা খাব তার পয়সা টাও তো ১৭৬৫০ কে অতিক্রম করে চলে গেছে। একমাস দুমাস পর যে কর্মস্থল থেকে নিজের বাড়ি কিংবা শ্বশুর বাড়ি যাবেন তার জন্যে ঝোলায় আর কিছু থাকেনা। সন্তান বা বউ এমন কি নিজে অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখানোর উপায় থাকেনা। তাহলে এই চাকরি করে টেনে হিচরে আর কতদিন রে ভাই? তাই খারাপ লাগুক আর নাই লাগুক বলতেই হয় হাইরে চাকরি। আপনি না বললেও বউ মনে মনে ঠিকই বলে। তাও যে টুকু চলছিল কোনরকম। এখন তো আবার বেতন সাত তারিখে হবে নাকি সাতান্ন তারিখে হবে তাও অনিশ্চিত। কেমনে এত ঠেলাঠেলি করে আগাবেন। এই কমিটি সেই কমিটি কত কমিটি? ওরে কমিটি রে! ফলাফল শুন্য। হোটেলে যে ছেলেটা গত তিন মাসে ৩৫০ টাকা মজুরীতে কাস্টমারদের পানি সরবরাহ করেছে এ মাসে বেতন বাড়িয়ে ৪০০ না করলে সে আর এই হোটেলে কাজ করবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছে। একটা বাস কন্ডাক্টার সে প্রতিদিন নীলফামারী থেকে রংপুর দুইবার যাতায়াতে দিন ১০০০ টাকা করে নেয় যে কিনা ক খ শেখার জন্য জীবনে একটি পয়সা ব্যয় করেনি। একটি রাত জেগে বই পরেনি। আর আপনি আমি কত বছর, কত রাত, জেগে জেগে কত শত হাজারো বই পরে কত পরীক্ষা নিরীক্ষা দিয়ে আজকে এই চাকরি পেয়েছি যার প্রতিদিনের মাইনা একজন মুর্খ অশিক্ষিত অটো চালকের চেয়েও ৩০০ টাকা কম। কি দরকার ছিলো এত কষ্ট করে এই জায়গায় আসার! উত্তর একটাই। ভাগ্য।।। ভাগ্যটা আমাদের এতই ফাটা যে মাস শেষে একদিন হিসাব ছাড়া চাইনিজ হোটেলে পেট ভরে খেতে পারিনা। করোনার টিকা চাইনা, বেতন চাই, চাকরি রাজস্ব চাই।টিকা নিয়ে আর কি হবে কিছু দিন পর তো টাকার অভাবে না খেয়ে মরতে হবে।তাই বলি বেতন বন্ধ থাকাই শ্রেয়। বাঙালির পাকিস্তানিদের লাথি না পড়লে কোনদিন মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হতো না।সময় এসেছে জেগেউঠার।আর অভুক্ত নয়।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী অন্তত মুখে ২/৩ বার তিনি একটা অধিদপ্তর করে দিয়েছি বলেছেন।সেটা কোথায়?আমাদের নেতারা কি ওটার খোঁজ করেছেন কখনও আমার মনে হয়না।কারণ তারা ফাউন্ডেশন কিভাবে অধিদপ্তর হবে তা খুঁজতেই ব্যস্ত। আলাদা দপ্তর হলে ফাউন্ডেশন মুখ থুবড়ে পড়ার ভয়ে।মাননীয় প্রধান মন্ত্রী অপনি মানবতার মা ,যারা প্রতিবন্ধীদের পরম আদরে চিকিৎসা ও সেবা প্রদান করছেন তাদের নিরবে কান্না অস্রুশিক্ত হৃদযের আবেদন তাদের চাকুরি রাজস্বতে স্থানত্বর চায়।