রূপচর্চায় গোলাপের পাপড়ির দারুণ ব্যবহার

অনলাইন ডেস্ক: প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চার অনুষঙ্গ হিসেবে গোলাপের পাপড়ি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পূর্বে রানী এবং রাজকুমারীরা গোলাপের জলে স্নান করতেন। বর্তমান সময়ে ও সৌন্দর্য পিপাসু নারীরা রূপচর্চার গোলাপের ব্যবহার করে থাকে।  গোলাপের পাপড়ি দিয়ে রূপচর্চার কিছু পদ্ধতি জেনে নেওয়া যাক।

ত্বকের কোমলতা বাড়াতে

– রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ২ কাপ পানিতে একটি তাজা গোলাপ ফুলের পাপড়ি ভিজিয়ে রাখুন। ঘুম থেকে উঠে এই পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা ও কোমলতা বাড়বে।

– ২ টেবিল চামচ মধু, ২ টেবিল চামচ দুধের সাথে শুকনো গোলাপের পাপড়ি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে রাতে ঘুমানোর পূর্বে মুখে লাগান এবং শুকানোর পর ধুয়ে ফেলুন।

ময়েশ্চারাইজার হিসেবে

– ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ও ১ চা চামচ গোলাপের রস মিশিয়ে মুখে লাগান।এটি ত্বকে ময়েশ্চারাইজার এর কাজ করবে।

ব্রণ দূর করতে

– ব্রণের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে গোলাপের পাপড়ি। ব্রণের স্থানগুলোতে গোলাপের পাপড়ি বেটে লাগাতে পারেন।

– গোলাপের পাপড়ির সাথে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে ব্রণের স্থানটিতে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্রণের সমস্যা দূর করতে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

– নিমপাতা ও আলুর সাথে গোলাপের পাপড়ি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। সপ্তাহে ২-৩ বার এটি ব্যবহার করতে পারেন।

ডার্ক সার্কেল দূর করতে

– চোখের নিচের কালি দূর করতে ও গোলাপের পাপড়ির ভূমিকা বেশ কার্যকরী। একটি পাত্রে কিছু সময় ধরে গোলাপ ভিজিয়ে রাখুন তারপর তুলা দিয়ে সেই পানি চোখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট চোখ বন্ধ করে রাখুন। এটি নিয়মিত করতে পারেন ডার্ক সার্কেল দূর করতে।

সানস্ক্রিন হিসেবে

– রোদে বের হওয়ার আগে গোলাপের রস, আমন্ড অয়েল ও শসার রস মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন।এতে ত্বক রোদে পুড়ে যাওয়া হতে অনেকটাই বাঁচবে।

হাতের যত্নে

– ২ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া ও একটি ডিমের কুসুমের সাথে গোলাপের পাপড়ি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে হাতে লাগিয়ে রাখুন ১৫-২০ মিনিট।তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।এটি হাতের উজ্জ্বলতা ও কোমলতা বাড়াবে।

ঠোঁটের যত্নে

– ঠোঁটের যত্নে লিপবামের চেয়েও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে গোলাপের পাপড়ি।গোলাপের পাপড়ি বেটে তার সাথে দুধ আর মধু মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এবং তুলা দিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে রেখে দিন ১০ মিনিট।এটে ঠোঁটের কালচে ভাব দূর হয় ও গোলাপি আভা তৈরি হয়।

– গোলাপের পাপড়ির রস ও তুলসি পাতার রস মিশিয়ে ও ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারেন।

চুলের যত্নে

– চূলকে প্রাণবন্ত ও মসৃণ করতে গোলাপের পাপড়ির জুড়ি নেই। ১ কাপ কসুম গরম পানিতে একটি তাজা গোলাপের পাপড়ি ভিজিয়ে রাখুন। এবার এর সাথে ১ টেবিল চামচ মধু ও ১ টেবিল চামচ বাদাম তেল মিশিয়ে ব্লেন্ড করুন। মিশ্রণটি মাথার তালুতে ঘষুন। ১৫-২০ মিনিট রেখে চুলে শ্যাম্পু করে নিন।

– গোলাপের পাপড়ি শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন তার সাথে হালকা গরম করা নারিকেল তেল মিশিয়ে চুলে ও মাথার তালুতে লাগান। চুলের আগা ফাটা থাকলে সেখানে বেশী করে লাগান। ২০-২৫ মিনিট পর ধুয়ে চুলে শ্যাম্পু করে ফেলুন।

সুগন্ধি তৈরিতে

– যুগ যুগ ধরেই সুগন্ধি হিসেবে গোলাপের পাপড়ি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।আপনি ঘরে বসেই খুব সহজে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে পারফিউম তৈরি করতে পারবেন। এজন্য আপনার প্রয়োজন হবে গোলাপের পাপড়ি কুঁচি ২ কাপ, গোলাপ জল ও স্প্রে বোতল।

– একটি পাত্রে ২ কাপ পানি গরম করে তার মধ্যে গোলাপের পাপড়ি দিয়ে দিন। পাপড়িগুলো যেন পানিতে ডুবে থাকে। ৩০ মিনিট  অল্প আঁচে রেখে নামিয়ে পানি ছেঁকে নিন।পাপড়িগুলো চেপে চেপে পানি বের করে নিন। এতে অল্প একটু গোলাপ জল মিশিয়ে স্প্রে বোতলে ঢেলে নিন। তৈরি হয়ে গেলো পারফিউম। ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করতে পারেন।