একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা নিয়ে পিরোজপুর সদর উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান বায়জিদ ঘুরে বেড়ালেও পুলিশে গ্রেফতার না করার অভিযোগ

পিরোজপুর প্রতিনিধি:
পিরোজপুরে স্থানীয় যুবলীগ নেতার হাত কাটা, ইউপি সদস্য আওয়ামীলীগ নেতার পা ভাঙ্গা, আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে হত্যা চেষ্টা হামলা সহ একাধিক মামলার আসামী গ্রেপ্তারী পরোয়ানা নিয়ে পিরোজপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এস এম বায়জিদ হোসেন ঢাকাসহ পিরোজপুরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশে গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দলীয় প্রভাবে এ সকল মামলার বাদীদের লোক মারফত মামলা তুলে নিতে দেয়া হচ্ছে নানা ধরনের হুমকি। পুলিশ প্রশাসনকে জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে মামলার বাদীরা।

অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, পিরোজপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এস এম বায়জিদ হোসেনের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৪ জানুয়ারী স্থানীয় কদমতলা ইউনিয়নের য্বুলীগ নেতা নাদিম খানকে হত্যার উদ্যেশে তার উপর হামলা চালিয়ে তার হাত বিচ্ছিন্ন করা, ২০২২ সালের ০২ জানুয়ারী পিরোজপুরের সিকদারমল্লিক ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতা রুহুল আমিন শেখের উপর হামলা চালিয়ে দুই পা ভেঙ্গে দেয়া মামলা, ২০২১ সালের ১৭ মে পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামীলীর চেয়ারম্যান প্রার্থীর উপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা চেষ্টা করা সহ বিভিন্ন মামলা। এ সময় মামলার উচ্চ আদালত থেকে কয়েক সপ্তাহের জামিন নিয়ে আসলেও তার মেয়াদ শেষ হলেও পরবর্তিতে আদালতে আত্মসর্মপন করেনি পিরোজপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এস এম বায়জিদ হোসেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ান নিয়ে প্রায় ঘুরে বেরাচ্ছে পিরোজপুর সদর ও নাজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ইফতার মাহফিলে অংগ গ্রহন সহ ঢাকার বিভিন্নস্থানের ঘুড়ে বেড়ানোর ছবি ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। অপর দিকে স্থানীয় যুবলীগ নেতাকে হাত কাটা, ইউপি সদস্য আওয়ামীলীগ নেতার পা ভাঙ্গা, আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে হত্যার উদ্যোগে হামলা সহ একাধিক মামলার আসামী হয়েও ভাইস চেয়াম্যান বায়জিদের চাচা ফারুখ শেখও গ্রেপ্তারী পরোয়ানা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং নিজে সহ লোক দিয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে মামলার বাদীদের কে। বিষয়টি মামলার বাদীরা বিভিন্ন সময় পুলিশের বিভিন্ন মহলে জানালেও অজ্ঞাত কারণে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না।

হামলার হাত বিচ্ছিন্ন হওয়া যুবলীগ নেতা নাদিম খান জানান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের চাচা ফারুক নিজে আমার হাত কুপিয়ে কেটে ফেললেও পুলিশ এ মামলার আসামী ফারুক ও বায়জিদকে গ্রেপ্তার করছে না। মামলা দিলে আসামীরা পালিয়ে থাকার কথা থাকলেও এখন আসামীদের হুমকি ও হামলার ভয়ে উল্টো মামরার স্বাক্ষীদের একপ্রকার পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। কদমতলা বাজারে পুলিশের সামনেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে আসামী ফারুক ঘুরে বেরাচ্ছে লোকজন নিয়ে এবং বায়জিদ ঢাকায় এবং কদমতলায় ঘুরে বেড়াচ্ছে যা ফেসবুকে ছবিতে দেখা যাচ্ছে। পুলিশকে জানালেও তারা নানা ধরেনের তালবাহান মার্কা কথাবর্তা বলে। আর আসামীরা স্বাক্ষীদের হুমকি দিয়ে বলে পুলিশে তাদের কেনা। মামলা তুলে না নিলে আরো সমস্যা হবে।

আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর স্ত্রী ও মামলার বাদী নাসিমা আক্তার জানান, তার স্বামী কদমতলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী ছিলেন। নৌকা মার্কার প্রার্থীকে পরাজিত করার জন্য তার স্বামী হানিফ খান কে হত্যার করার উদ্যশে উপর হামলা চালিয়েছিলো বায়জিদ, ফারুক, শিহাব সহ সন্ত্রাসী বাহিনী। এ ঘটনায় পিরোজপুর সদর থানায় মামলা হলেও হামলাকারী মামলার অন্যতম আসামী বায়জিদ ও ফারুখ এখন এলাকায় ঘুরে বেরাচ্ছে। হুমিক দিয়ে মামলার তুলে নেয়ার জন্য এবং নানা ভাবে ভয় দিচ্ছে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের। পুলিশ প্রশাসনকে বারবার বিষয়টি জানালেও পুলিশ অজ্ঞাত কোন কারনে কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।

হামলায় পা ভাঙ্গা ইউপি সদস্য রুহুল আমিন শেখ বলেন, রাস্তা থেকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে দিনে দুপুরে হত্যা করার জন্যই তার উপর হামলা চালায়। পরে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙ্গ দেয় সন্ত্রাসীরা। এ মামলার আসামী বায়জিদ, ফারুক ও সরোয়ার সহ অন্যরা ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন স্থানে লোকসম্মুখে ঘুড়ে বেরাচ্ছে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। পুলিশকে জানালেও পুরিশ কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।

এ সকল বিষয়ে পিরোজপুর সদর থানার ওসি আ.জা. মো: মাসুদুজ্জামান জানান, পিরোজপুর সদর থানায় সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বায়জিদ এর নামে কোন গ্রেপ্তারী পরোয়ানা নাই। তাই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছে না।